December 23, 2024, 6:14 am

গলাচিপায় জীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবন সরকারি ঘরের দাবি বৃদ্ধা রাহিমা বেগমের

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
  • Update Time : Wednesday, May 19, 2021,
  • 253 Time View

মোগো দেখার কেউ নাই, বাবা, মোরে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেবেন। একনা ঘরের ব্যবস্থা করি দিলে আল্লাহ তোমারে ভাল করবে।

মুই মরলে মোর লাশ দাফন করিবার জায়গাও মোর নাই’। কথাগুলো এক নিশ্বাসে শেষ করে চোখ মুছেন- বৃদ্ধা রাহিমা বেগম। তার এই আবেগ মাখা আর্তনাদ হয়তো সমাজপতিদের মনকে নাড়া দিবে না।

পৌছাবেনা সরকারি কোন কর্মকর্তার কান পর্যন্ত। গলচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বড় গাবুয়া গ্রামের গাজীপুর খেয়ার উত্তর পাশের ঘাটে বেড়া দিয়ে তৈরি ঘর, আর ভাংগা টিনের ছাউনি দিয়ে বানানো ছোট একটি চালা ঘরে বাস করছেন রাহিমা বেগম। বৃষ্টি এলে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে নির্ঘুম রাত কাটে তার পরিবারের ৬ সদস্যের। দুর্দশাগ্রস্ত আর ভাগ্য বিড়ম্বিত নারী রহিমা বেগম (৬৫)। অনেকেই সরকারি-বেসরকারি সাহায্য পেলেও এ পর্যন্ত কিছুই জোটেনি তার ভাগ্যে।

নিত্য অভাব আর অসুস্থতাকে সাথে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে তার দিন কাটছে রহিমা বেগমের। নিজের জমি না থাকায় প্রায় ১৫ বছর ধরে সরকারি খাস জমিতে টিন দিয়ে চালা করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। বিধবা রহিমা বেগমের বয়সের ছাপ স্পষ্ট হলেও এখন পর্যন্ত ভাগ্যে জোটেনি বয়ষ্ক ভাতা, ভিজিডি কার্ড বা উল্লেখযোগ্য কোন সরকারি সাহায্য, কিংবা মাথা গোঁজার মতো একটা সরকারি ঘর।

তার ছেলে দিনমুজুরীর কাজ করে চলে এই অভাগীর সংসার। ভূমিহীন এই নারীর থাকার একটি ঘর গত এক বছর আগে ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টিতে ভেঙ্গে পড়ে। সেই থেকে এই ভাঙ্গা টিনের চালা ঘরে এই ঠা-ায় বসবাস করছেন কোনভাবে। রহিমা বেগম উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বড় গাবুয়া গ্রামের মৃত শানু প্যাদার স্ত্রী ও মৃত কাসেম প্যাদার পুত্রবধু। রাহিমা বেগম বলেন, ‘আমি দীর্ঘ দিন ধরে সরকারি খাস জমিতে বসবাস করছি। আমার ঘর ভেঙ্গে পড়েছে ঘরটি তোলার কোন উপায় নেই।

আমি সরকারে কাছে একটি ঘর চাই। কেউ যদি আমাকে একটি ঘর এবং জায়গার ব্যবস্থা করে দিত তাহলে নিশ্চিন্তে থাকতাম। ওই গ্রামের প্রতিবেশী জুলেখা বাজার কমিটির সভাপতি ও যুবলীগ নেতা মোস্তফা হাওলাদার জানান, রাহিমা বেগম খুবই অসহায়। তার থাকার ঘরটি ভেঙ্গে পড়েছে। টাকা পয়সা না থাকায় ভাঙ্গা ঘরটিতে রাত্রিযাপন করছেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে তার জন্য একটি সরকারি ঘর পাওয়া উচিৎ বলে মনে করি। গোলখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘আসলেই রাহিমা বেগম যেই জায়গায় আছে সেটি সরকারি খাস জায়গা।

প্রায় দেড় যুগ ধরে সে ওখানেই বসবাস করছে। এই জায়গায় একটি সরকারি ঘর পেলে রাহিমা বেগমের বাকি জীবন সুন্দরভাবে চলবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার জানান, অসহায়, হতদরিদ্রদের জন্যই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘর। রাহিমা বেগম দরখাস্ত করলে আমি বিষয়টি দেখব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71